জেডটিভি বাংলা ডেস্ক:
জাতিসংঘের চলমান আর্থিক সংকট ও বাজেট সংকোচনের কারণে পাঁচটি শান্তিরক্ষা মিশন থেকে ১ হাজার ৩১৩ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীকে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের মিলিটারি অ্যাফেয়ার্স অফিস (ওএমএ) থেকে গত ১৪ অক্টোবর পাঠানো এক চিঠিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। চিঠিটি বাংলাদেশের জাতিসংঘে স্থায়ী মিশন ও সামরিক উপদেষ্টার উদ্দেশে পাঠানো হয়।
ওএমএ’র ভারপ্রাপ্ত সামরিক উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল শেরিল পিয়ার্সের পক্ষ থেকে পাঠানো চিঠিতে স্বাক্ষর করেন চিফ অব স্টাফ ক্যাপ্টেন লনি ফিল্ডস জুনিয়র, এবং খসড়া প্রস্তুত করেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তানবির আলম—যিনি বর্তমানে সংস্থাটির মিলিটারি পিস অপারেশন সাপোর্ট শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘ মহাসচিবের নির্দেশে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে ১৫ শতাংশ বাজেট কমানো হচ্ছে, যা সরাসরি মাঠপর্যায়ের শান্তিরক্ষীর সংখ্যা হ্রাস করবে। ফলে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অংশগ্রহণও সাময়িকভাবে সীমিত করা হচ্ছে।
যেসব মিশন থেকে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী ফিরবেন: দক্ষিণ সুদান (UNMISS): ৬১৭ জন, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র (MINUSCA): ৩৪১ জন, সুদানের আবেই অঞ্চল (UNISFA): ২৬৮ জন, কঙ্গো (MONUSCO): ৭৯ জন, পশ্চিম সাহারা (MINURSO): ৮ জন।
জাতিসংঘ সদর দপ্তর জানিয়েছে, এ সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ আর্থিক সংকটজনিত, এতে বাংলাদেশের প্রতি কোনো আস্থার ঘাটতি নেই। তারা আশ্বস্ত করেছে, বাজেট পুনর্গঠন হলে বাংলাদেশসহ অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর শান্তিরক্ষীদের পুনরায় নিয়োগের সুযোগ থাকবে।
এর আগে কঙ্গোতে বাংলাদেশ পুলিশের সর্বশেষ কন্টিনজেন্ট প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছিল জাতিসংঘ। ওই ১৮০ সদস্যের ইউনিটে ৭০ জন নারী পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন, যাদের আগামী নভেম্বরে দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ১৯৮৮ সালে প্রথমবার জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যোগ দেয় মাত্র ১৫ জন সামরিক পর্যবেক্ষক পাঠিয়ে। এরপর থেকে দেশটির সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা বিশ্বের ৪৩টি অঞ্চলে ৬৩টি মিশনে অংশ নিয়েছেন। বর্তমানে বিশ্বের ১০টি শান্তিরক্ষা মিশনে ৫,৬১৯ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী দায়িত্ব পালন করছেন।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরের বার্তা:
“বাংলাদেশ শান্তিরক্ষায় আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। বর্তমান সিদ্ধান্ত কেবল সাময়িক বাজেট পরিস্থিতির প্রতিফলন।”