October 27, 2025, 10:12 pm
Headline :

তরুণ কৃষি-উদ্যোক্তাদের সহায়তায় ‘সামাজিক ব্যবসা তহবিল’ গঠনের প্রস্তাব ইউনূসের

তরুণ কৃষি-উদ্যোক্তাদের সহায়তায় ‘সামাজিক ব্যবসা তহবিল’ গঠনের প্রস্তাব ইউনূসের

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাংলাদেশের তরুণ কৃষি-উদ্যোক্তা, নারী, কৃষক ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকারীদের টেকসই উন্নয়নে সহায়তা দিতে একটি ‘সামাজিক ব্যবসা তহবিল’ গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

স্থানীয় সময় রোববার ইতালির রোমে অনুষ্ঠিত বিশ্ব খাদ্য ফোরামের পার্শ্ব বৈঠকে আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের (ইফাদ) প্রেসিডেন্ট আলভারো লারিও-র সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ প্রস্তাব দেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “দরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্যসেবা, তরুণ উদ্যোক্তা, নারী, কৃষক ও মৎস্য খাতের কর্মীদের জন্য নতুন কর্মসংস্থান ও সামাজিক সমস্যা সমাধানে এই সামাজিক ব্যবসা তহবিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।”

বৈঠকে উভয় নেতা বাংলাদেশের গভীর সমুদ্র মৎস্য আহরণ, আম ও কাঁঠালের রপ্তানি বৃদ্ধি, জলবায়ু-সহনশীল কৃষি উদ্যোগ এবং মহিষের দুধ থেকে মোজারেলা চিজসহ দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনে সহায়তা — এসব বিষয়ে কৌশলগত সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।

অধ্যাপক ইউনূস ইফাদ প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং কৃষি, সামাজিক ব্যবসা ও প্রযুক্তিতে সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্র যাচাই করতে একটি প্রতিনিধি দল পাঠানোর অনুরোধ করেন।

প্রেসিডেন্ট লারিও জানান, ইফাদ বাংলাদেশের সঙ্গে সামাজিক ব্যবসা উদ্যোগে অংশীদার হতে আগ্রহী এবং বেসরকারি খাতের সহযোগিতা আরও জোরদার করতে চায়। বর্তমানে সংস্থাটি বাংলাদেশে ছয়টিরও বেশি কৃষি প্রকল্পে অর্থায়ন করছে।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “আম রপ্তানি শুরু হয়েছে, তবে পরিমাণ এখনও সীমিত। চীন বাংলাদেশ থেকে ব্যাপক হারে আম ও কাঁঠাল আমদানিতে আগ্রহ দেখিয়েছে। তাই ফল প্রক্রিয়াকরণ, হিমাগার ও রপ্তানি অবকাঠামোতে বিনিয়োগ জরুরি।”

বৈঠকে উপস্থিত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানান, বাংলাদেশি নারী খামারিরা ইতিমধ্যে মহিষের দুধ থেকে মোজারেলা চিজ তৈরি করছেন। তিনি দেশে দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদন বাড়াতে ইফাদের সহায়তা কামনা করেন।

গভীর সমুদ্র মৎস্য আহরণের প্রসঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “প্রযুক্তি ও বিনিয়োগের অভাবে আমাদের জেলেরা এখনো অগভীর পানিতেই মাছ ধরছেন। ইফাদের অর্থায়ন ও প্রযুক্তিগত সহায়তা পেলে এই খাতের বিপুল সম্ভাবনা কাজে লাগানো সম্ভব।”

১৯৭৮ সাল থেকে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করে ইফাদ এখন পর্যন্ত ৩৭টি প্রকল্পে অংশীদার হয়েছে, যার মোট মূল্য ৪.২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ১.১৩ বিলিয়ন ডলার সরাসরি ইফাদের অর্থায়ন। বর্তমানে ৪১২ মিলিয়ন ডলারের ছয়টি প্রকল্প চলমান এবং আরও একটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, এসডিজি সমন্বয়কারী ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদ, পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম এবং ইফাদের সহযোগী সহ-সভাপতি ডোনাল ব্রাউন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Our Like Page