নিজস্ব প্রতিবেদক :
গুম ও খুনের মামলায় পরোয়ানাভুক্ত ১৫ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পূর্ণ বিচারিক ক্ষমতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।
রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন অনুযায়ী, গুম, খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করার ক্ষমতা এই আদালতের রয়েছে। এই আইন প্রশ্নবিদ্ধ করার কোনো সুযোগ নেই।”
চিফ প্রসিকিউটর জানান, ইতোমধ্যে ট্রাইব্যুনাল থেকে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজিরের বিধান তাজুল ইসলাম বলেন, “যদি সেনা হেফাজতে থাকা আসামিদের বিষয়ে আইনি মতামত চাওয়া হয়, আমরা দিতে প্রস্তুত। তবে আইন অনুযায়ী, কোনো গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করতেই হবে।”
তিনি আরও বলেন, “গণমানুষের প্রত্যাশা হলো, যাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিচারের সম্মুখীন করা হবে। ট্রাইব্যুনাল সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই এগোচ্ছে।”
সেনাবাহিনীর প্রতিক্রিয়া এর আগের দিন (১১ অক্টোবর), ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান জানান, চার্জশিটভুক্ত ২৫ জন সেনা কর্মকর্তার মধ্যে ১৬ জনকে সেনাসদরে সংযুক্ত হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জন ইতোমধ্যে হাজির হয়েছেন। তবে তিনি দাবি করেন, এখন পর্যন্ত গুম সংক্রান্ত মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কোনো কপি সেনাবাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে পৌঁছায়নি।
সাইবার হামলার অভিযোগ একই দিন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চলমান মামলার প্রথম দিনের যুক্তিতর্ক চলাকালীন সময়ে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের ফেসবুক পেজে সাইবার হামলার অভিযোগও তোলেন তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “নির্বিচার অপরাধের তথ্য যাতে বিশ্ববাসী জানতে না পারে, সে উদ্দেশ্যেই এই হামলা চালানো হয়েছে। তবে আমরা সফলভাবে পেজ পুনরুদ্ধার করেছি।”
পটভূমি:
সম্প্রতি গুম ও হত্যার অভিযোগে দায়ের হওয়া একাধিক মামলায় সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগপত্র গৃহীত হয়। মামলায় ১৫ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, যাদের অধিকাংশই এখন সেনা হেফাজতে রয়েছেন।