নিজস্ব প্রতিবেদক :
গুম-খুনে অভিযুক্ত ২৮ জন সামরিক কর্মকর্তাকে সেফ এক্সিট দেওয়ার ‘চেষ্টা’ এবং বিচার বিলম্বের প্রতিবাদে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে ‘ইনকিলাব মঞ্চ’। শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির মুখপাত্র শরিফ উসমান হাদি এক বিবৃতিতে ৫ দফা দাবি উত্থাপন করেন।
তিনি অভিযোগ করেন, জাতীয় নিরাপত্তা ও বিচার ব্যবস্থাকে উপেক্ষা করে অভিযুক্তদের পলায়নের পথ করে দেওয়া হচ্ছে, যা রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। সেই সঙ্গে ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করার দাবিও জানান তিনি।
উত্থাপিত ৫ দফা দাবিগুলো:
১. গুম ও খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত ২৮ সামরিক কর্মকর্তাকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দ্রুত বিচার কার্যক্রম শুরু করতে হবে। ২. ভারতের সংশ্লিষ্টতা প্রতীয়মান হওয়ায় গুম-খুন বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে ভারতের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে হবে। ৩. পিলখানা ও গুম তদন্ত কমিশনের সদস্য এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিমের নিরাপত্তা রাষ্ট্রীয়ভাবে নিশ্চিত করতে হবে। ৪. পিলখানা হত্যাকাণ্ড তদন্তে গঠিত কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন কোনও রকম সম্পাদনা বা গোপন না করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে। ৫. সেফ এক্সিট পাওয়া ৬২৬ জন সামরিক কর্মকর্তা ও অন্যান্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি করে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
অতীত ঘটনা ও প্রেক্ষাপট
সংগঠনটির দাবি, ২০০৯ সালের পিলখানা ট্র্যাজেডি, বিভিন্ন সময়ে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কিছু সেনা কর্মকর্তা বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করছেন এবং তাদের রক্ষা করতে রাজনৈতিকভাবে প্রভাব খাটানো হচ্ছে। এতে বিচার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ সংবাদ সম্মেলনে সরাসরি ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার ‘নেপথ্য ভূমিকা’র অভিযোগ তোলেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র। তিনি বলেন, “এ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে।”
প্রসঙ্গত, ইনকিলাব মঞ্চ একটি নতুন উদীয়মান রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম, যা সাম্প্রতিক সময়ে গুম, খুন ও নিরাপত্তা ইস্যুতে সরব অবস্থান নিয়েছে। সংগঠনটির দাবি, তারা ”সাংবিধানিক ন্যায়বিচার ও রাষ্ট্রীয় জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার” পক্ষে কাজ করছে।