নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদাবাজি, দখলদারি, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে পঞ্চগড় থেকে বাংলাবান্ধা পর্যন্ত লংমার্চ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টায় পঞ্চগড় চিনিকল মাঠ থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচিতে অংশ নেয় পাঁচ শতাধিক মোটরসাইকেল ও কয়েকটি পিকআপভ্যান।
সাড়াজাগানো শুরুর আগে সরব আহ্বান উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের নেতৃত্বে এ লংমার্চ শুরু হয়। এর আগের দিন শুক্রবার, তিনি নিজের ফেসবুক পেজে এক ভিডিও বার্তায় সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে লংমার্চে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে পাঁচ উপজেলার এনসিপি এবং জাতীয় নাগরিক যুব শক্তির নেতাকর্মীরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
১৬৫ কিমি দীর্ঘ রুট, দুইটি পথসভা প্রায় ১৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রুটে লংমার্চটি পঞ্চগড় সদর থেকে শুরু হয়ে তেঁতুলিয়ার বিভিন্ন ইউনিয়ন অতিক্রম করে বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের সিপাইপাড়া বাজারে গিয়ে শেষ হয়। পথে তেঁতুলিয়া চৌরাস্তায় প্রথম পথসভা এবং সিপাইপাড়া বাজারে দ্বিতীয় পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। উভয় সভায় বক্তব্য দেন সারজিস আলম।
রাতের বেলায় লংমার্চটি আবার পঞ্চগড়ে ফিরে এসে শেরেবাংলা পার্কসংলগ্ন জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে গিয়ে শেষ হয়, যেখানে অনুষ্ঠিত হয় সমাপনী ভাষণ। স্লোগানে মুখরিত ছিল শহর লংমার্চ চলাকালে সারজিস আলম একটি পিকআপের ওপর থেকে মাইক হাতে স্লোগান দিতে দেখা যায়। তার কণ্ঠে গর্জে উঠেছিল:
“চাঁদাবাজদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না”
“সন্ত্রাসীদের ঠিকানা, পঞ্চগড়ে হবে না”
“মাদকের ঠিকানা, পঞ্চগড়ে হবে না”
দাবি জানিয়ে প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন
লংমার্চে অংশ নেওয়া কর্মীদের হাতে ছিল বিভিন্ন দাবিনামা সংবলিত প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন। উল্লেখযোগ্য দাবিগুলোর মধ্যে ছিল:
“পঞ্চগড়ে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল চাই”
“পুলিশকে অবশ্যই রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে”
প্রেক্ষাপট ও প্রাসঙ্গিকতা
এই লংমার্চ ছিল এনসিপির ধারাবাহিক গণসংযোগ কর্মসূচির অংশ। এর মাধ্যমে তারা স্থানীয়ভাবে সচেতনতা বৃদ্ধি ও রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগের কৌশল হিসেবে নিজস্ব অবস্থান তুলে ধরেছে। জনসম্পৃক্ত এই আয়োজন সামাজিক মাধ্যমে যেমন সাড়া ফেলেছে, তেমনি মাঠপর্যায়ে এনসিপির সক্রিয় উপস্থিতির বার্তাও দিয়েছে।
সারাংশে, এনসিপির এই লংমার্চ শুধু রাজনৈতিক শোডাউন নয়, বরং এটি ছিল একটি সুসংগঠিত প্রতিবাদ, যার মাধ্যমে চাঁদাবাজি ও দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান তুলে ধরা হয়। জনগণের অংশগ্রহণও দেখিয়েছে, তারা এসব ইস্যুতে কতটা মনোযোগী।