October 27, 2025, 4:45 pm
Headline :

ভারতের বিরুদ্ধে ৫০ লাখ যুবক যুদ্ধ করবে: আব্দুল্লাহ তাহের

ভারতের বিরুদ্ধে ৫০ লাখ যুবক যুদ্ধ করবে: আব্দুল্লাহ তাহের

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ড. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো ধরনের সমঝোতা বা আপস হবে না। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি কখনো দেশের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে, তবে অন্তত ৫০ লাখ যুবক ভারতের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার যুদ্ধ করবে।

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বাংলাদেশ আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন (কোবা)-এর আয়োজিত এক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. তাহের বলেন, “অনেকে আমাকে ভয় দেখায়—যদি জামায়াত ক্ষমতায় আসে, পাশের দেশের লোকজন বাংলাদেশে ঢুকে পড়বে। আমি বলি, তারা ঢুকুক। ঢুকলেই আমাদের সেই বদনাম যাবে, যা ১৯৭১ সালে মিথ্যাভাবে চাপানো হয়েছে। তখন আমরা প্রকৃত স্বাধীনতার যোদ্ধা হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগ পাবো।”

তিনি দাবি করেন, এ যুদ্ধের জন্য সংগঠিতভাবে প্রস্তুতি থাকবে। অন্তত ৫০ লাখ যুবক এতে অংশ নেবে। তাদের মধ্যে এক অংশ গেরিলা যুদ্ধে যোগ দেবে, অন্য অংশ বিস্তৃত অঞ্চলে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। তিনি ধর্মীয় দৃষ্টান্ত টেনে বলেন, রাসূল (সা.)-এর সময়কার যুদ্ধনীতি থেকেই প্রেরণা নিয়ে এ ধরনের পরিকল্পনা তৈরি হবে।

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সমালোচনা করে তাহের বলেন, আওয়ামী লীগ ভারতের বিরুদ্ধে কখনো লড়াই করবে না; বরং সহযোগিতা করবে। অন্য বড় রাজনৈতিক দলও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম নয়। “তখন সংগঠিত শক্তি হিসেবে সামনে আসবে জামায়াতই। তখন আমরা হব খাঁটি মুক্তিযোদ্ধা,”—যোগ করেন তিনি।

অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রসঙ্গ টেনে তাহের বলেন, রাষ্ট্রীয়ভাবে যাকাত আদায় করা হলে তিন থেকে চার বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ থেকে দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব। তিনি জানান, যাকাতের অর্থ কেবল দান হিসেবে খরচ না করে যদি ব্যবসা ও কর্মসংস্থান তৈরিতে ব্যবহার করা হয়, তবে তা দেশের অর্থনীতিতে বিপ্লব ঘটাতে পারে।

তিনি উদাহরণ দেন—যদি একজন যুবককে যাকাত থেকে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়া হয় এবং সেই অর্থে ১০টি বাদামের কার্ট ব্যবসা শুরু করা হয়, তবে প্রতিটি কার্টে অন্তত ১০ জনের কর্মসংস্থান হবে। প্রতিদিন একেকটি কার্ট থেকে গড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা আয় সম্ভব। মাস শেষে কেবল একজন পরিচালকেরই আয় দাঁড়াবে প্রায় ৯০ হাজার টাকা। এই মডেল অনুসরণ করলে কয়েক বছরের মধ্যেই ব্যাপক কর্মসংস্থান তৈরি হবে।

প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তাহের বলেন, আন্দোলন ও সংগ্রামে তারা সবসময় অবদান রেখেছেন। বিদেশে থেকেও দেশের মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করেছেন, বিভিন্ন সময়ে অর্থ ও মনোবল দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। “যারা রক্ত দিয়েছেন, কলম দিয়ে লড়েছেন বা জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাদের নাম ইতিহাসে শ্রদ্ধা ও সম্মানের সঙ্গে লেখা থাকবে,” বলেন তিনি।

ড. তাহেরের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়, জামায়াতে ইসলামী শুধু রাজনৈতিক নয়, সামাজিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকেও নিজেদের বিকল্প শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে। তবে তার ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধের মন্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Our Like Page