অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশে সরকারি চাকরির সবচেয়ে বড় নিয়োগ পরীক্ষার নাম বিসিএস। এই পরীক্ষা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই শিক্ষার্থী-চাকরিপ্রত্যাশীদের নানা অভিযোগ, দেরি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির মতো বিষয় সামনে এসেছে। এসব সমস্যা নিরসন করে স্বচ্ছতা ও আস্থার জায়গায় ফিরিয়ে আনতে বিসিএস পরীক্ষার ক্যালেন্ডার নির্ধারণ ও তা কঠোরভাবে মানার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, “বিসিএস হলো এন্ট্রি পয়েন্ট। এখানেই যদি অনিয়ম থেকে যায়, তাহলে গোটা প্রশাসনিক কাঠামোতেই এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাই প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষা নিতে হবে, নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। এ ব্যাপারে কোনো গাফিলতি চলবে না।”
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, দায়িত্ব নিয়ে সমস্যাগুলো সমাধান করতে হবে। সংস্কার ছাড়া স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আসবে না। যারা ভবিষ্যতে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নেবে, সেই তরুণ প্রজন্মকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে সঠিক পরীক্ষা প্রক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বৈঠকে পিএসসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের মোনেম জানান, কমিশন ইতোমধ্যেই একটি পাঁচ বছরের রোডম্যাপ প্রস্তুত করেছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতি বছরের নভেম্বর থেকে পরবর্তী বছরের অক্টোবর পর্যন্ত বিসিএস পরীক্ষা ও নিয়োগ কার্যক্রম শেষ করা হবে। এর ফলে পরীক্ষার্থীদের অনিশ্চয়তা দূর হবে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়মতান্ত্রিক রূপ পাবে।
তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছরে রাজনৈতিক প্রভাব বিসিএস পরীক্ষাকে বিতর্কিত করেছে। স্বজনপ্রীতি, প্রশ্নফাঁস ও নানা অনিয়মে পিএসসির ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এখন আর কোনো অনিয়মের সুযোগ রাখা হবে না। কমিশন এমন সংস্কার করেছে যাতে বিসিএস আবার সবার আস্থার প্রতীক হয়ে উঠতে পারে।
কমিশন সদস্যরা বৈঠকে জানান, শুধু জাতীয় পর্যায়ে নয়, আন্তর্জাতিক মানেও প্রতিযোগিতার উপযোগী করার লক্ষ্যে প্রশ্নপত্রের মান উন্নত করা হচ্ছে। বিসিএসের প্রস্তুতি নেওয়া শিক্ষার্থীরা যেন বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়ও অংশ নিতে সক্ষম হন, সেই লক্ষ্যেই মানোন্নয়নের কাজ চলছে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন—পিএসসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের মোনেম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজউদ্দিন মিয়া এবং পিএসসির সদস্য মো. সুজায়েত উল্যা, মো. জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া, অধ্যাপক ড. এম সোহেল রহমান, অধ্যাপক ড. চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. শাহনাজ সরকার এবং সচিব ড. মো. সানোয়ার জাহান ভূঁইয়া।