নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে কেবল রাজনীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে অর্থনীতিতেও প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তার মতে, উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় প্রত্যেক নাগরিকের অংশগ্রহণ নিশ্চিত না হলে অর্থনীতি কোনো গোষ্ঠীর হাতে বন্দী হয়ে পড়বে, যা দেশের জন্য ক্ষতিকর।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান ১ম বর্ষ: যুগপৎ আন্দোলন শরিক দল’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন—
“প্রত্যেক নাগরিককে অর্থনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। নারী, গ্রামীণ জনগোষ্ঠী এমনকি অবসরপ্রাপ্ত নাগরিকদেরও কাজে লাগাতে হবে। অর্থনীতি যদি সবার হয়, তখনই নাগরিকরা আয়-আশা বাড়াবে, ট্যাক্স দেবে এবং রাষ্ট্রের কাছে জবাবদিহি দাবি করবে।”
তিনি আরও বলেন, ট্যাক্স প্রদানের মাধ্যমে নাগরিকরা তাদের অধিকার আদায় করতে শিখবে। “তারা তখন বলতে পারবে—আমার ট্যাক্সের টাকা অপচয় করা যাবে না, ভুল খাতে খরচ করা যাবে না। অর্থনীতির গণতন্ত্রীকরণ মানেই হচ্ছে মানুষের ক্ষমতায়ন।”
রাজনৈতিক দলগুলোর সমালোচনা করে খসরু বলেন, “বাংলাদেশের মালিক জনগণ, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে সহনশীল হতে হবে, ভিন্নমতকে সম্মান জানাতে হবে।”
তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ দেশকে ক্ষুদ্র স্বৈরাচারদের হাতে ছেড়ে গেছে। “কেউ যদি বলে আমাদের দাবি না মানলে নির্বাচন করবে না কিংবা আন্দোলনে যাবে—এটাও অগণতান্ত্রিক। গণতন্ত্র মানে জনগণের অংশগ্রহণ, সংসদে আলোচনা আর নির্বাচনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত।”
বিএনপির এই নেতা মনে করেন, বিপ্লব-পরবর্তী যে দেশগুলো দ্রুত গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছে, তারাই উন্নত হয়েছে। আর যারা বিলম্ব করেছে, তারা গৃহযুদ্ধ ও অর্থনৈতিক ধ্বংসের মুখে পড়েছে।
“আমাদেরও দেরি করার সুযোগ নেই,” বলেন তিনি। “জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে। তা না হলে জাতি বিভক্ত হবে এবং ভবিষ্যতে ভয়াবহ ক্ষতি ডেকে আনবে।”
তিনি আরও যোগ করেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়াই হলো জনগণের চিন্তার প্রতিফলন। “সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে ফিল্টারেশন প্রসেস। জনগণের কাছে আবার যেতে হবে এই উপলব্ধি থাকলে নেতারা জনগণের পক্ষে থাকবেন, নইলে স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠিত হবে।”
আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলামসহ শরিক দলের অন্যান্য নেতারা বক্তব্য রাখেন।