September 10, 2025, 10:50 pm
Headline :
আন্দোলন হাইজ্যাক হয়েছে, দাবি নেপালের তরুণদের নেপালে আটক বাংলাদেশিরা নিরাপদ, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফিরবেন কুড়িগ্রামে বিজিবির অভিযান: ৭ দিনে ২ কোটি টাকার মাদক ও পণ্য জব্দ ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরণের বাণিজ্য ও আকাশসীমা বন্ধ করেছে তুরস্ক গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টার রাজশাহীতে কলাবাগান থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধারনিজস্ব প্রতিবেদক ১৬ গেট দিয়ে সাড়ে ৩ ফুট করে ছাড়া হচ্ছে কাপ্তাই হ্রদের পানি ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার যোগাযোগ বন্ধ ডাকসু নির্বাচনে বড় ব্যবধানে জয়ী ‘জুলাই কন্যা’ তন্বী ডাকসুর জয়কে ‌‘জুলাই প্রজন্মের বিজয়’ বললেন নবনির্বাচিত ভিপি

গঙ্গার পানি চুক্তি নবায়ন আলোচনায় ঢাকা-দিল্লি

গঙ্গার পানি চুক্তি নবায়ন আলোচনায় ঢাকা-দিল্লি
২০২৬ সালে শেষ হচ্ছে মেয়াদ, দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ছে

ডেস্ক রিপোর্ট

১৯৯৬ সালে স্বাক্ষরিত ভারত-বাংলাদেশ গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তি ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে শেষ হতে যাচ্ছে। ৩০ বছর মেয়াদি এই চুক্তি নবায়নে উভয় দেশই আগ্রহী হলেও বাস্তবায়ন পদ্ধতি, আঞ্চলিক রাজনীতি এবং প্রযুক্তিগত জটিলতা এখন আলোচনার মূল এজেন্ডা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

🔹 ৯ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে বৈঠক

চুক্তি নবায়নের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বসছে যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) বৈঠক। বাংলাদেশের পক্ষে যৌথ নদী কমিশনের সদস্য মোহাম্মদ আবুল হোসেনের নেতৃত্বে একটি কারিগরি দল সেখানে যোগ দেবেন। বৈঠকের কেন্দ্রবিন্দু থাকবে—গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তির নবায়ন ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া।

🔹 রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক কিছুটা শীতল হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করছেন। তবে সম্পর্কের টানাপোড়েন সত্ত্বেও পানি ইস্যুতে দুই দেশ নিয়মিত আলোচনায় বসছে। চলতি বছরের মার্চেও দিল্লিতে জেআরসি বৈঠক হয়েছিল।

🔹 দীর্ঘ ইতিহাস

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মোট ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে। কিন্তু গঙ্গা ছাড়া অন্য কোনো নদীর পানি বণ্টনে আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়নি। বিশেষ করে তিস্তা চুক্তি এখনো অমীমাংসিত থেকে গেছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তির কারণে।

১৯৯৬ সালে গঙ্গা পানি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া। চুক্তির মেয়াদ ছিল ৩০ বছর, যা ২০২৬ সালে শেষ হবে। ২০২৪ সালের জুনে দুই দেশ ঘোষণা দিয়েছিল যে, নবায়নের লক্ষ্যে কারিগরি পর্যায়ের আলোচনা শুরু হয়েছে।

🔹 বৈঠকের জটিলতা

কূটনৈতিক সূত্রে জানা যায়, গত মার্চে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কিছু বিষয়ে দুই দেশ একমত হতে না পারায় কোনো “মিনিটস” সই হয়নি। আবার ভারতীয় সংসদে সম্প্রতি জানানো হয়েছে, আনুষ্ঠানিক নবায়ন আলোচনা এখনো শুরু হয়নি। ফলে সেপ্টেম্বরের বৈঠকে ভারতের অবস্থান কী হবে, সেটি নিয়েই এখন কূটনৈতিক মহলে কৌতূহল।

🔹 কারিগরি দিক

যৌথ নদী কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত প্রতিদিন চারবার গঙ্গার পানির প্রবাহ মাপা হয় এবং নির্ধারিত ভাগ অনুযায়ী পানি বণ্টন করা হয়। কারিগরি দলের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, চুক্তি অনুযায়ী পানি ভাগাভাগি সাধারণত ঠিকভাবেই হচ্ছে। তবে এবারের বৈঠকে বাংলাদেশ উদ্বেগ জানিয়েছে—গঙ্গার পানি প্রবাহ স্বাভাবিকের তুলনায় কম, যা কৃষি ও পরিবেশের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

🔹 ভবিষ্যৎ দিক

ঢাকা ও দিল্লি উভয়পক্ষই চাইছে গঙ্গা চুক্তি নবায়ন হোক। তবে নতুন চুক্তিতে পরিবেশগত পরিবর্তন, মৌসুমি প্রবাহ হ্রাস এবং দুই দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বাস্তবতা—সবকিছুই প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে পশ্চিমবঙ্গের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হচ্ছে।

🔹 উপসংহার

১৯৯৬ সালের ঐতিহাসিক চুক্তি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের একটি বড় সাফল্য হিসেবে বিবেচিত। তবে এবার নবায়নের আলোচনায় রাজনৈতিক উত্তাপ, সীমান্তনদীর জটিলতা ও পরিবেশগত পরিবর্তন নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর দিল্লির বৈঠক থেকে এ বিষয়ে একটি স্পষ্ট দিকনির্দেশনা আসবে বলে আশা করছে উভয় দেশ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Our Like Page