নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, দেশের মানুষ এখনও ভাত-ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য এবং কিছু বিপথগামী রাজনীতিবিদদের শাসনের বশবর্তীতা থেকে মুক্তির লক্ষ্যে নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। সোমবার (২০ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী চালকদলের একাংশের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা জানান।
আলাল বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ লড়াই করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। এক প্রজন্মের পর আরেক প্রজন্ম এসেছে, তবুও আমাদের যুদ্ধ শেষ হয়নি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার জন্য রণাঙ্গনে লড়াই হয়েছে, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ এখনও থেমে নেই। কারণ, ভাত-ভোটের অধিকারের জন্য, এবং দেশের কিছু দূরপাল্লার রাজনীতিবিদদের আধিপত্য থেকে মুক্তির জন্য জনগণ সংগ্রাম করে চলেছে।” তিনি আরও বলেন, “রাজনীতির মঞ্চে আমরা দেখছি এক দল মুখে অন্য কথা বলছে, কিন্তু কাজ করছে ভিন্নভাবে। একের পর এক কর্মসূচি ঘোষণা করা হচ্ছে, অথচ বাস্তবে তারা যে কাজ করছে তা ভিন্ন।”
আলাল ন্যাশনাল ক্যাম্পেইন পার্টি (এনসিপি) ও জামায়াতে ইসলাম নিয়ে চলমান বিতর্কের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “এনসিপি জামায়াতকে প্রতারক হিসেবে আখ্যায়িত করেছে, আবার জামায়াতও এনসিপির নেতার বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করেছে। আসলে জামায়াত মানেই ইসলাম নয়। তারা এক সময় পূজার সময় মণ্ডপে গীতা পাঠ করত, এমনকি হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য শাখা গঠন করেছিল, যা পরে বাতিল করে। এখন আবার এনসিপির সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্ব চলছে, যা একটি অশোভন পরিস্থিতি তৈরি করেছে।” সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ শুধু ভোটের অধিকারের জন্য লড়াই করেনি। তারা শুধু বেঁচে থাকার জন্য বা খেয়ে-পরার জন্যও লড়াই করেনি। এই লড়াই ছিল বিভিন্ন প্রত্যাশার মিলনস্থল, যেখানে চাওয়া আর পাওয়ার মধ্যে একটি সমীকরণ গড়ে উঠেছে। যারা এই লড়াইয়ে প্রাণ দিয়েছেন, আহত হয়েছেন, তাদের অবদান জাতির ইতিহাসে চিরস্মরণীয়।”
তিনি গণতন্ত্রের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য হিসেবে মতভিন্নতার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “গণতন্ত্র হলো ফুলের বাগানের মতো, যেখানে এক ধরনের ফুলই থাকবে এমন নয়। এই বাগান গড়ার জন্য আমরা আন্দোলন করেছি। আমাদের সঙ্গে বন্ধু সংগঠনগুলোও এই সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছে। তরুণ, কিশোর, শ্রমজীবী, নারী, অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য এবং বুদ্ধিজীবীরা একসঙ্গে রাস্তায় নেমেছিল। এর ফলেই আজ বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছে।”
শেষে তিনি সতর্ক করে বলেন, “যদি আমরা আমাদের মতের ভিন্নতাকে হিংসা ও উগ্রতায় পরিণত করি, তাহলে আর কেউ নিশ্চয়তা দিতে পারবে না যে, আওয়ামী লীগ আর ফিরে আসবে না।”