আন্তর্জাতিক ডেস্ক
অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে গেছে মাত্র ১৩ বছরের এক আফগান কিশোর। কাবুল থেকে দিল্লিগামী একটি উড়োজাহাজের ল্যান্ডিং গিয়ারবক্সে লুকিয়ে সে পৌঁছে যায় ভারতের রাজধানীতে। যদিও তার গন্তব্য ছিল ইরান।
ঘটনাটি ঘটে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) ভোরে। কুন্দুজের ওই কিশোর কাবুল বিমানবন্দরে যাত্রীদের ভিড়ের মধ্যে গোপনে প্রবেশ করে এবং কেএএম এয়ারের একটি ফ্লাইটের চাকায় রাখা জায়গায় উঠে পড়ে। কিন্তু যে বিমানটি সে বেছে নেয়, সেটি যাচ্ছিল দিল্লিতে, তেহরানে নয়।
প্রায় এক ঘণ্টা ৩৪ মিনিটের ভয়ংকর সেই যাত্রায় তাকে টিকে থাকতে হয়েছে অক্সিজেনবিহীন, চাপ নিয়ন্ত্রণহীন এবং হিমশীতল—মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে। যেখানে মৃত্যুহার প্রায় ৭৭ শতাংশ, সেখান থেকে অক্ষত অবস্থায় বেঁচে যাওয়া সত্যিই অবিশ্বাস্য। তার সঙ্গী ছিল কেবল একটি লাল রঙের অডিও স্পিকার।
রোববার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর বিমানবন্দর কর্মীরা ছেলেটিকে সাদা পাঞ্জাবি-পায়জামা পরে ঘোরাফেরা করতে দেখে আটক করেন। পরে তাকে সিআইএসএফের হাতে তুলে দেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, নিছক কৌতূহল থেকেই সে এই দুঃসাহসিক যাত্রায় নেমেছিল।
বিকেল ৪টার দিকে একই বিমানে করেই তাকে ফেরত পাঠানো হয় কাবুলে।
উল্লেখ্য, বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারে লুকিয়ে ভ্রমণের চেষ্টার ইতিহাসে এর আগেও বহু মৃত্যু ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের তথ্যে দেখা যায়, ১৯৪৭ থেকে ২০২১ পর্যন্ত অন্তত ১৩২ জন এমন ঝুঁকি নিয়েছে, যাদের বেশিরভাগই প্রাণ হারিয়েছে। ভারতের ইতিহাসেও এমন করুণ ঘটনা রয়েছে। ১৯৯৬ সালে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের দিল্লি-লন্ডন ফ্লাইটে একইভাবে লুকিয়ে যাত্রা করেছিলেন প্রদীপ ও বিজয় সাইনি। প্রদীপ বেঁচে ফিরলেও বিজয় প্রাণ হারান।