October 27, 2025, 10:13 am
Headline :
জায়েদ খানের বিয়ের গুঞ্জন: সত্যি নাকি শুধু আলোচনার বিষয়? আর্জেন্টিনার সংসদ নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট মাইলির দলের বিপুল জয় সালাহউদ্দিন আহমদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ঐক্যের বার্তা সালাহউদ্দিন আহমদের ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’র প্রভাব বাংলাদেশে সীমিত উপকূলে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর হবিগঞ্জে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা বাস উল্টে নিহত ১, আহত অন্তত ৩০ হবিগঞ্জে ট্রাকের ধাক্কায় বাস খাদে উল্টে নিহত ১, আহত ২০ জলাভূমি ও দেশীয় মাছ বাঁচাতে রাজশাহীতে জেলেদের মানববন্ধন বাবা ঘুমাচ্ছে মা, তুমি কান্না করো না’— দাফন শেষে আহাজারিতে ভারী কালামের বাড়ি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে বৃহস্পতিবার ইসির সঙ্গে ৩১ মন্ত্রণালয়ের বৈঠক

হত্যার পর লাশ ফেলা হচ্ছে নদীতে, ২২ মাসে চার জেলায় মিলেছে ৭৩ মরদেহ

হত্যার পর লাশ ফেলা হচ্ছে নদীতে, ২২ মাসে চার জেলায় মিলেছে ৭৩ মরদেহ

নিজস্ব প্রতিবেদক,

খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চার জেলায় নদী-খাল ও ডোবাসহ বিভিন্ন জলাশয়ে অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। গত ২২ মাসে এই অঞ্চল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৭৩টিরও বেশি মরদেহ, যার এক-তৃতীয়াংশের পরিচয় এখনও অজানা।

নৌপুলিশের তথ্যমতে, ২০২৪ সালে যেখানে ৩৪টি মরদেহ উদ্ধার হয়েছিল, চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসেই সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯-এ। খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও পিরোজপুর—এই চার জেলার নদীগুলোতেই ঘটছে এমন ঘটনা।

পুলিশ বলছে, উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলোর মধ্যে দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা ও হত্যাকাণ্ড—এই তিন ধরণের মৃত্যু রয়েছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্থলভাগে হত্যা করে মরদেহ নদীতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে, যাতে প্রমাণ লোপাট করা যায়। পচে-গলে যাওয়া লাশগুলোর পরিচয় শনাক্ত করতেও পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে।

সম্প্রতি দাকোপ, পাইকগাছা ও আশপাশের এলাকায় তিনটি মরদেহ উদ্ধারের পর ফের আলোচনায় এসেছে এ বিষয়টি। ১৭ অক্টোবর দাকোপের চুনকুড়ি নদী থেকে আশিষ সরকারের বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধার হয়। একই দিনে পাইকগাছার শিবসা নদী থেকে ইকরাম হোসেন নামের এক যুবকের মরদেহ পাওয়া যায়। আগের দিনও উদ্ধার হয় এক অজ্ঞাত যুবকের মরদেহ।

নৌপুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পূর্ণবয়স্ক ও নবজাতক—দুই ধরনের হত্যাজনিত মরদেহই উদ্ধার হচ্ছে। নবজাতক বাদে অধিকাংশ মরদেহ অর্ধগলিত অবস্থায় থাকায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট শনাক্তকরণ ছাড়া পরিচয় জানা কঠিন হয়ে পড়ে। জনবল সংকট থাকলেও তারা সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান খুলনা নৌপুলিশের সুপার ড. মঞ্জুর মোর্শেদ।

তিনি বলেন, “নদীতে আমরা তিন ধরণের মরদেহ পাচ্ছি—দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা ও হত্যা। এর মধ্যে হত্যাজনিত মরদেহের সংখ্যাই বেশি। নদী থেকে মরদেহ উদ্ধারের হার গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।”

এদিকে, মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিই এই পরিস্থিতির মূল কারণ। বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম বলেন, “৫ আগস্টের পর পুলিশের নজরদারি কমে গেছে। খুলনাসহ আশপাশের জেলায় যেভাবে র‌্যাব ও পুলিশ একসময় সক্রিয় ছিল, এখন সেই তৎপরতা নেই। ফলে অপরাধীরা মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে।”

তিনি আরও বলেন, দ্রুত বিচার ও আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে মরদেহ শনাক্ত করা গেলে অপরাধীরা দ্রুত শনাক্ত হবে এবং ভয় পাবে। একই সঙ্গে পুলিশকে ঢেলে সাজানোর তাগিদ দেন তিনি।

সবশেষে নৌপুলিশ জানায়, মরদেহ উদ্ধারের ঘটনা বেড়ে গেলেও তারা প্রতিটি ঘটনার পেছনের রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে। তবে পর্যাপ্ত জনবল ও আধুনিক প্রযুক্তির ঘাটতি এই তদন্ত প্রক্রিয়ায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Our Like Page