নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজনীতিতে বহুল আলোচিত ‘সেফ এক্সিট’ প্রশ্নে সরাসরি উত্তর দিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, “কে কোথায় যেতে চায়, আমি জানি না। আমার ছেলে-মেয়ে সবাই দেশে। আমি একা গিয়ে কী করব?”
রোববার (১২ অক্টোবর) আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এই মন্তব্য করেন তিনি।
ভোট নিরাপত্তা নিয়ে ৯ দফা পরিকল্পনা
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বৈঠকে নির্বাচনকেন্দ্রিক নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। নিচে তা সারাংশ আকারে তুলে ধরা হলো:
১. বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা: আইনের আওতায় এনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ।
২. নির্বাচনে অংশীজনদের সমন্বয়ে কর্মপরিকল্পনা: সব সংস্থার মধ্যে সুস্পষ্ট সমন্বয় নিশ্চিত করা।
৩. মাঠ প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে কাজের নির্দেশনা: ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসি সবাইকে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে বলা হয়েছে। ৪. আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীলতা: আইনবহির্ভূত কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা।
৫. ভোটকেন্দ্রে নজরদারির ব্যবস্থা: ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে সিসিটিভি ও বডি ওয়ার্ন ক্যামেরা স্থাপন।
৬. পূর্ববর্তী নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্তদের পরিহার: ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে থাকা ব্যক্তিদের পুনরায় দায়িত্ব না দেওয়ার সুপারিশ।
৭. গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল বৃদ্ধি: আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টহল জোরদার।
৮. নির্বাচনী প্রশিক্ষণ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ: দেড় লাখ পুলিশ সদস্যের প্রশিক্ষণ চলছে; ২৮টি ব্যাচে ১৩০টি ভেন্যুতে। ৯. সীমানা পুনর্নির্ধারণে নিরাপত্তা পরিকল্পনা: আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত।
নির্বাচনে সেনা ও বিজিবির উপস্থিতি ৮০ হাজার সেনা সদস্য ৩৩ হাজার বিজিবি সদস্য (১১০০ প্লাটুন)
প্রায় দেড় লাখ পুলিশ সিসিটিভি ও মনিটরিং সিস্টেম আনসার ও অন্যান্য বাহিনীর অংশগ্রহণ
প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলমান থাকলেও ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কথায় স্পষ্ট, নির্বাচনকে ঘিরে সরকার নিরাপত্তা নিয়ে কোনো আপস করতে রাজি নয়। “সেফ এক্সিট” নিয়ে গুঞ্জন থাকলেও তিনি তা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন। এখন নজর থাকবে নির্বাচনকেন্দ্রিক আইনশৃঙ্খলা বাস্তবায়নে ঘোষিত পরিকল্পনা কতটা কার্যকর হয় সে দিকে।