নিজস্ব প্রতিবেদক
ময়মনসিংহের তারাকান্দার ৭০ বছর বয়সী হালিম উদ্দিন আকন্দ— যিনি এলাকায় ‘হালিম ফকির’ নামে পরিচিত। দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে মাথায় জট বাধা চুল, লম্বা দাড়ি আর গোঁফ নিয়ে বাউল ফকিরের মতো জীবন কাটাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু কোরবানির ঈদের আগে কাশিগঞ্জ বাজারে কয়েকজনের জোরপূর্বক চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় আজ তিনি ভেঙে পড়েছেন মানসিক ও শারীরিকভাবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা। স্থানীয়রা বলছেন, হালিম ফকিরকে ঘিরে কোনো সমস্যা ছিল না। তার চুল ও দাড়ি কারও অসুবিধা সৃষ্টি করেনি। তাই জোর করে তার চুল কেটে দেওয়া মানবাধিকারে হস্তক্ষেপ।
ভুক্তভোগী হালিম উদ্দিন আকন্দ বলেন, “৮-১০ জন মিলে জোর করে আমাকে ধরেছিল। আমি চিৎকার করলেও কেউ শোনেনি। চুল কাটতে গিয়ে আমি অচেতন হয়ে পড়েছিলাম। এরপর থেকে বাজারে যাই না, ঘরেই লুকিয়ে থাকি। আল্লাহই বিচার করবেন।”
স্থানীয় বাউল সমিতির নেতারাও ঘটনাটির নিন্দা জানিয়ে দ্রুত তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি দাবি করেছেন।
অন্যদিকে অভিযুক্ত সংগঠন হিউম্যান সার্ভিস বাংলাদেশ জানিয়েছে, পরিবারের অনুরোধে তারা চুল কাটতে গিয়েছিল। তবে হালিমের বড় ছেলে এ দাবি অস্বীকার করে বলেছেন, “আমরা কাউকে খবর দিইনি। বাবার চুল থাকার কারণে কারও কোনো অসুবিধা হচ্ছিল না। এটি জোরপূর্বক অন্যায় কাজ।”
বর্তমানে হালিম উদ্দিন নিজেকে ঘরবন্দি করে রেখেছেন। কাজকর্ম করতে পারছেন না, সামাজিক জীবনের সঙ্গেও সম্পর্ক প্রায় ছিন্ন হয়ে গেছে তার।
এ বিষয়ে তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হালিম উদ্দিন চাইলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।